18 May 2024, 02:16 pm

রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন ফের শুরু হয়েছে। পরিবেশবাদী এবং নাগরিক আন্দোলনের কর্মীদের তুমুল বিরোধিতাকে সঙ্গী করে সুন্দরবনের নিকটবর্তী স্থানে এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট নির্মাণ সম্পন্ন এবং দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানির (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বাগেরহাটের রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুেকন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত এবং সঞ্চালন লাইনে দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার নাগাদ পূর্ণ সক্ষমতায় ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিআইএফপিসিএল। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। পরীক্ষামূলক উৎপাদন পর্যায় সম্পন্ন হলে আগামী ডিসেম্বরে কেন্দ্রটিতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।

এর আগে গত ১৫ আগস্ট কেন্দ্রটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত ২৪ অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাত থেকে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। প্রায় এক মাসশেষে পুনরায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হলো।

সূত্র জানায়, রামপাল কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটে উৎপাদনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষ হওয়ার পর ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারের (এনএলডিসি) সনদ পাওয়া বাকি। কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অগ্রগতি-সূচি অনুযায়ী, আগামী বছরের জুনে এ ইউনিটেও উৎপাদন শুরু হবে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় (মোট ১৩২০ মেগাওয়াট) উৎপাদন করলে দৈনিক প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পুড়বে। প্রথম ইউনিটটি পূর্ণ মাত্রায় চললে দৈনিক সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হবে। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন কয়লা বসুন্ধরার মাধ্যমে আনা হচ্ছে। ৮০ লাখ টন কয়লা আমদানি করতে দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ঐ কয়লা আসতে পারে।

মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সমান মালিকানা রয়েছে। কেন্দ্রটি পরিচালনা করবে সমান ৫০ শতাংশ অংশীদারত্বে গঠিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল)। এর নির্মাণ ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস লিমিটেড (ভেল)।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১০ সালে পিডিবি ও এনটিপিসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্মাণ ঠিকাদারের কাজে ব্যয় হবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা (প্রায় ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার)। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঠিকাদার ভেল এই ঋণ সংগ্রহ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী মৈত্রী কোম্পানির সঙ্গে ঋণদাতা ভারতের এক্সিম ব্যাংকের ১৬০ কোটি মার্কিন ডলারের এ ঋণচুক্তি সই ও চুক্তিপত্র বিনিময় হয়। চূড়ান্ত ঋণচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার এই ঋণের সার্বভৌম নিশ্চয়তা (সভরেন গ্যারান্টি) দেয়। এর আগে ২০১৬ সালের ১২ জুলাই ঢাকায় ভেল এবং বিআইএফপিসিএলের মধ্যে নির্মাণচুক্তি সই হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4697
  • Total Visits: 743890
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1126

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ ইং
  • ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ৯ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, দুপুর ২:১৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018